নেশা

By:

Format

হার্ডকভার

Country

বাংলাদেশ

350

কৌটিল্যের অর্থশাস্ত্রে সুরাধ্যক্ষ এবং সুরা সম্পর্কীয় বিস্তারিত আলোচনা রয়েছে৷ রাজার আয় হবে সাতটি বিষয় থেকে৷ সেতু, দুর্গ, রাষ্ট্র, খনি, বন, ব্রজ ও বণিকপথ থেকে তিনি আয় করবেন৷ এই সাতটি বিষয় থেকে তঁার আয় হবে ২২ ধরনের৷ ২২ জন অধ্যক্ষ ২২টি বিভাগ দেখাশোনার দায়িত্বে থাকবেন৷ এঁদের মধ্যে একজন সুরাধ্যক্ষ, যঁার কাজ সুরা সম্পর্কীয়৷ সুরা এবং তার বিক্রি, উৎপাদন সংক্রান্ত যাবতীয় বিষয়ের দায়িত্ব এই সুরাধ্যক্ষেরই৷
কৌটিল্যের গ্রন্থটি সংস্কৃত থেকে বাংলায় ১৯৫০ খ্রিস্টাব্দে অনুবাদ করেছিলেন অধ্যাপক রাধাগোবিন্দ বসাক৷ কৌটিল্য তঁার গ্রন্থে পানগৃহ সম্পর্কে বলেছেন, সুরাধ্যক্ষ এমন পানাগার তৈরি করাবেন, যেখানে অনেক কক্ষ এবং একাধিক শয্যা ও আসন থাকবে৷ সেখানে গন্ধদ্রব্য, মাল্য এবং জল রাখতে হবে৷ পানকারীর সঙ্গে থাকা অর্থ, অলংকার, পোশাক প্রভৃতি সম্পর্কে আগেই জেনে নিতে হবে৷ মাতাল অবস্থায় কারও ওইসব অপহৃত হলে মদবিক্রেতাকে তা পূরণ করে দিতে হবে৷ বিভিন্ন ঋতুতে আরামদায়ক উপকরণ দিয়ে পানশালাগুলি সাজানো হত৷ পানীয় পরিবেশন করত সুন্দরী মহিলারা৷ তারা একই সঙ্গে পানকারীদের নজরে রাখত৷
কৌটিল্য ৬ রকমের মদের উল্লেখ করেছেন৷ —১) মেদক, ২) প্রসন্না, ৩) আসব, ৪) অরিষ্ট, ৫) মৈরেয় এবং ৬) মধু৷ একটু দীর্ঘ হলেও গুরুত্বের কারণে শ্রীবসাকের অনুবাদে এগুলির প্রস্তুতি বিবরণ এখানে উদ্ধৃত করতেই হচ্ছে৷ তিনি জানাচ্ছেন: এক দ্রোণ পরিমিত জল, ১/২ আড়ক–পরিমিত তণ্ডুল বা চাউল ও তিন প্রস্থ পরিমিত কিণ্ব (সুরাবীজ)— এই তিন বস্তুর মিশ্রণের নাম মেদকযোগ (অর্থাৎ এই বস্তুগুলি মিলিত হইলে মেদক নামক সুরা প্রস্তুত হয়)৷ ১২ আড়ক–পরিমিত পিষ্ট (ময়দা বা আটা) ও ৫ প্রস্থ–পরিমিত কিণ্ব বা তৎস্থলে পুত্রক–নামক বৃক্ষের ছাল ও ফলযুক্ত (বক্ষ্যমান) জাতিসম্ভার (পাঠালোগ্র প্রভৃতি যোগক) মিশাইয়া প্রসন্না যোগ (অর্থাৎ প্রসন্না–নামক সুরা) তৈয়ার করা যায়৷ ১ তুলা (বা ১০০ পল) পরিমিত কপিখফলসার, ৫ তুলা (বা ৫০০ পল) পরিমিত ফাণিত (কঁাচা ইক্ষুরস–রাব, ইহার নামান্তর) ও একপ্রস্থ মধু মিশাইয়া তৈয়ার করা যায়৷ এই যোগে যদি এক–চতুর্থাংশ কপিখাদির পরিমাণ অধিক করা হয়, তাহা হইলে এই আসব যোগ উত্তম বলিয়া পরিজ্ঞাত হয়, এবং ইহাতে যদি কপিখাদির পরিমাণ এক চতুর্থাংশ কম করা হয়, তাহা হইলে ইহা নিকৃষ্ট আসবযোগ বলিয়া পরিজ্ঞাত হয়৷ প্রত্যেক রোগের উপশমের জন্য চিকিৎসকগণ যেভাবে অরিষ্ট প্রস্তুত করেন সেই ভাবেই (অর্থাৎ বৈদ্যাপ্রসিদ্ধ উপায়ে) অরিষ্টযোগ বুঝিতে হইবে৷