ডাস ক্যাপিটাল পাঠ প্রবেশিকা

By:

Format

হার্ডকভার

Country

বাংলাদেশ

500

বইটি বর্তমানে আমাদের সংগ্রহে নেই। আপনি বইটি প্রি-অর্ডার করলে প্রকাশনায় মুদ্রিত থাকা সাপেক্ষে ৪-৮ সপ্তাহের মধ্যে ডেলিভারি করা হবে।

প্রেক্ষাপট ছাড়া দৃশ্য হয় না। ছবি আঁকতে লাগে ক্যানভাস। আমরা যাকে অর্থনৈতিক কাজ বলি, সেগুলো হচ্ছে ক্যানভাস। আমাদের জীবন আঁকা হয় সেই ক্যানভাসে।

অর্থনীতি বলতে যে আলাদা বিষয় পড়ানো হয়, মার্ক্স সে রকম কোনো কিছু মানতেন না। মার্ক্স একে বলতেন ‘পলিটিক্যাল ইকোনমি’। মানুষ বেঁচে থাকার জন্য যা কিছু করে, তার সবকিছু এর অন্তর্ভুক্ত। যা কিছু সে তৈরি করে সব কিছু এখানে উৎপাদন। এমন কি মানুষের চিন্তাও উৎপাদনের অংশ। এর মধ্যে মানুষের সঙ্গে অপর মানুষের সম্পর্ক, প্রকৃতির সঙ্গে মানুষের সম্পর্কও পড়ে। সে হিসেবে পলিটিক্যাল ইকোনমিকে বলা যায় ‘সম্পর্ক শাস্ত্র’।

মানুষের চিন্তা তার বহাল জীবন থেকে তৈরি হয়। এই জগতের মধ্যেই সে জন্মায়। বাতাসের মতোই এর অস্তিত্ব মানুষ আলাদা করে বুঝতে পারে না। ফলে এই জগতকে নিয়ে প্রশ্ন করা কঠিন। এই জগত কেন এমন তার চাইতে একে মেনে নেওয়া সহজ। কার্ল মার্ক্স তাঁর ডাস ক্যাপিটাল-এ এই কাজটাই করেছেন।

প্রশ্নাতীতকে প্রশ্ন করা সহজ মনে হবে না। কিন্তু এই প্রশ্ন করাটা জরুরি। সেটা মার্ক্স তরুণ বয়সে বুঝে বলেছিলেন, ‘ঠিক মতো করা প্রশ্নই সে প্রশ্নের উত্তর’। তাই ডাস ক্যাপিটাল পাঠ সহজ মনে হয় না।

আরও ব্যাপার আছে। মানুষের চেতনা প্রকাশিত হয় ভাষায়। মার্ক্স বলতেন যে, ভাষা হচ্ছে চেতনার শরীর। এই ভাষার একটা নির্দিষ্ট সামাজিক কালে নির্দিষ্ট অর্থ থাকে। সমাজ নিজে সেই অর্থ ঠিক করে দেয়। সেই অর্থ দিয়ে নিজেকে টিকিয়ে রাখে। তার মানে দাঁড়ায়, সমাজের ঠিক করে দেওয়া অর্থে আপনি সমাজকে ঠিক মতো বুঝতে পারবেন না। সে আপনাকে সেই অর্থই বোঝায়, যে অর্থে সে নিরাপদ থাকে।

ভাষার যে অর্থ সমাজ ঠিক করে দেয় তা দিয়ে সমাজকে যদি ঠিক মতো বোঝা যায়, তাহলে সমাজকে বদলাতে চাইলে ভাষার নতুন অর্থ আগে ঠিক করতে হবে। মার্ক্স সমাজকে বুঝতে চেয়েছেন তাঁকে বদলানোর জন্য। তাই এই সমাজকে বোঝার কাজ করতে গিয়ে তিনি প্রতি মুহূর্তে ভাষার নতুন অর্থও তৈরি করেন। এখন আমরা যদি ভাষার বহাল অর্থ দিয়েই মার্ক্সকে বুঝতে চাই, তাহলে মার্ক্স দুর্বোধ্য মনে হবে। এটা ডাস ক্যাপিটাল পাঠের প্রধান সমস্যা। মার্ক্স আপনার কাছে আপনার চারপাশে যে জগৎ, তার ভাষার মধ্যে নতুন অর্থ তৈরির আশা করেন। ক্যাপিটাল-এর প্রথম খণ্ডের দ্বিতীয় সংস্করণের মুখবন্ধে মার্ক্স বলছেন–আমি অবশ্যই ধরে নিচ্ছি এই বই পড়ছেন এমন পাঠক যার নতুন কিছু শেখার ইচ্ছে আছে আর তাই নিজের মতো করে ভাববার সাহস আছে।

মানুষের চিন্তা ইতিহাসের একেকটা মোড়ে এসে আটকে যায়। পরে দেখা যায় তার সমাধান হয়েছে এমন সরলভাবে যে কেউ তা কল্পনাও করতে পারেনি। জার্মান ভাবাদর্শে যেমন বলেছেন, দর্শন, কাব্য, ইতিহাসচর্চা কোনো মৃত মানুষ করতে পারে না। এসব করতে হলে বেঁচে থাকতে হয়। বেঁচে থাকতে হলে খেতে পরতে হয়। খাওয়া-পরার ব্যবস্থা করতে হয়। সেগুলো উৎপাদন করতে হয়। আর তা করতে গেলে অপর মানুষ আর জগতের সঙ্গে বিভিন্ন রকম সম্পর্ক তৈরি হয়।

মার্ক্সের ক্যাপিটাল পড়া মানে তাই পাঠকের নিজের চারপাশের জগৎ নিয়ে সজাগতা দাবি করে। নিজের মতো করে সেই জগতকে বুঝতে চাওয়ার সাহস এখানে পূর্বশর্ত। সমাজ, শাস্ত্র, মিডিয়া যেমন করে বোঝায় তার সঙ্গে একটা নিজের মতো করে বোঝাপড়া। গুগল ম্যাপ কখনও নিজে কোনো জায়গায় যাওয়ার বিকল্প হয় না। ঠিক তেমনই ক্যাপিটালের এই পাঠ প্রবেশিকা আপনার নিজের ক্যাপিটাল পাঠের বিকল্প নয়।

এই বই আপনাকে বা যার কাছ থেকে পড়তে নিয়েছেন, তাঁকে খরিদ করতে হয়েছে। তাও একটা পণ্য হিসেবে। দুনিয়াকে পণ্য বানিয়ে ফেলার যে আলোচনা করেছেন ডাস ক্যাপিটালে, আপনার হাতের বইও সেই হিসেবের মধ্যে পড়ে।

এই পৃষ্ঠাগুলোর লেখা একটা সম্ভাবনার কথাও বলে। মার্ক্স সেই সম্ভাবনার জন্য লিখে গেছেন। মার্ক্সের পরও আরও অনেকে চেষ্টা করে গেছেন এই কেনা-বেচার দুনিয়ার চাইতে ভালো কোনো পৃথবীর জন্য। তাই এই বই হাতে তুলে নেওয়ার সঙ্গে আপনি এক সম্ভাবনাকে হাতে তুলে নিচ্ছেন।

Writer

Translator

Publisher

ISBN

9789849976493

Pages

218

Country

বাংলাদেশ

Format

হার্ডকভার

0 reviews
0
0
0
0
0

There are no reviews yet.

Be the first to review “ডাস ক্যাপিটাল পাঠ প্রবেশিকা”

Your email address will not be published. Required fields are marked *

1 2 3 4 5
1 2 3 4 5
1 2 3 4 5