-21%
সময় ভ্রমণ: দার্জিলিং- পাহাড়-সমতলের গল্পগাছা
500₹ Original price was: 500₹.390₹Current price is: 390₹.
ইতিকথা ত্রয়ী
700₹ Original price was: 700₹.560₹Current price is: 560₹.
হাফ প্যাডেলের কাল
By:
Writer |
---|
Format |
হার্ডকভার |
---|
Country |
ভারত |
---|
350₹ Original price was: 350₹.275₹Current price is: 275₹.
- Cash on Delivery
- 7 Days Easy Return
- For Pre-order Books Need 15 to 45 Days to Deliver
- 100% Original
Related Products
বীরশ্রেষ্ঠদের কথা
বইটি বর্তমানে আমাদের সংগ্রহে নেই। আপনি বইটি প্রি-অর্ডার করলে প্রকাশনায় মুদ্রিত থাকা সাপেক্ষে ৪-৮ সপ্তাহের মধ্যে ডেলিভারি করা হবে।
বাঙালির শিকার স্মৃতি
৫০টি গল্প : অভিজিৎ সেন
গোস্বামীবাবুর হাসপাতাল থেকে ফিরে আসা এক মাসের উপর হয়ে গেল। তাঁকে দেখলে বোঝাই যায় না, অমন একটা মারাত্মক ব্যাপার ঘটে গিয়েছিল। বি শিফট ডিউটি না থাকলে তিনি আগের মতোই সন্ধেবেলায় ভলিবল খেলতে যাচ্ছেন। কারখানায় তাঁকে নাইট ডিউটি দেওয়া হচ্ছিল না। তিনি জানিয়ে দিয়েছেন, এখন আর নাইট করতে তাঁর অসুবিধে হবে না। বালকের ইস্কুল খুলে গেছে কিন্তু সে এখনও নতুন ক্লাসে যায়নি। দাদা রোজই ভাবছেন বুকলিস্ট নিয়ে বেনাচিতির বাজারে যাবেন নতুন ক্লাসের বই কিনতে কিন্তু সময় পাচ্ছেন না। কোয়ার্টারে কেউ না কেউ আছেনই গত এক মাস ধরে। গোস্বামীবাবুকে দেখতে আসছেন আত্মীয়রা বিভিন্ন জায়গা থেকে। কিছুদিন আগে ভবেশদা এসেছিলেন। তিনি আশালতার বড়ো দাদা। তিনি এক সপ্তাহ ছিলেন। এখন আছেন আশালতার বাবা। তিনি জামসেদপুরের স্টিল প্ল্যান্টে চাকরি করেন। ছুটি নিয়ে জামাইকে দেখতে এসেছেন। রোগা, লম্বা আর ফরসা। মাথাজোড়া টাক। খুব রাগি লোক, থেকে থেকেই রেগে যান তিনি। দুপুরে বালক যে বুবুবুড়িকে নিয়ে একটু খেলাধুলা করবে তার উপায় নেই। তিনি তখন ভাত খেয়ে ঘুমোন। খেলাধুলায় তো একটু আধটু আওয়াজ হবেই। তিনি প্রচণ্ড রেগে গিয়ে হাঁক দেবেন, –আশা – আশা।
দৌড়ে আসবেন আশালতা। তিনি মুখচোখ লাল করে বলবেন –-তো-ত্তো-র দেওরকে বা-ব্বারণ কর –
ভীষণ তোতলা তিনি। বালকের চাইতেও অনেক বেশি। বালক তো কেবল তখনই তোতলায় যখন কোনো কথা বলার জন্যে তার ভেতরটা আটুপাটু করতে থাকে। কিন্তু ইনি প্রতি কথাতেই তোতলান, ঠিক বালকের কাকু রামনিধির মতো। একটা কথা শেষ করতে তাদের এতো সময় লাগে যে তারা বেশি কথা বলতেই চান না।
গোস্বামীবাবুর ব্যাপারটা হওয়ার পর থেকেই আশালতা অনেকটা মিইয়ে গেছেন। তিনি সেরে গেছেন তবু এখনও আশালতার সেই রাগ রাগ ভাবটা ফিরে আসেনি। গলা না তুলেই তিনি বালককে শব্দ করতে বারণ করে নিজের কাজে চলে গেলেন। তাঁর চান খাওয়া এখনও বাকি।
সেদিনই আবার ঘটে গেল ব্যাপারটা। বি শিফট করে বাড়ি ফিরেছেন গোস্বামীবাবু। সকলের খাওয়া হয়ে গেছে। ওঘরে শুয়ে পড়েছেন আশালতার বাবা। এঘরে একটা বিছানায় বুবুবুড়িও ঘুমিয়ে পড়েছে। এবার আশালতা আরও দুটো বিছানা পাতবেন। একটা গোস্বামীবাবুর আর একটা বালকের। এখন তিনি এক গ্লাস জল হাতে দরজার কাছে দাঁড়িয়ে। গোস্বামীবাবু বুবুর বিছানায় বসে। বললেন, –অর্দ্ধুর বিছানা ওই ঘরে করলেই তো হয়।
আশালতা দরজায় হেলান দিয়ে গ্লাসে চুমুক দিয়ে এক ঢোঁক জল খেলেন। বালক তাঁর চোখে একটা হাসি ফুটতে দেখল। তিনি বললেন, –কেন?
এখন তাঁর চোখের হাসি আরও মিষ্টি, আরও স্পষ্ট, ঠোঁটের উপরেও যেন খানিক নেমে এল হাসিটা। দাদা জবাব না দিয়ে আশালতার চোখের দিকে তাকিয়ে আছেন। আশালতা চোখেমুখে খুব হাসছেন কিন্তু আওয়াজ শোনা যাচ্ছে না। বললেন, –হবে না, তোমার না শরীর খারাপ!
দাদা এখনও আগের মতোই তাকিয়ে আছেন। আস্তে আস্তে চোখের মণি স্থির হয়ে এল, ঠোঁট দুটো অল্প অল্প কাঁপতে শুরু করেছে। আর তাঁকে দেখতে দেখতে আশালতার চোখের হাসি নিমেষেই বদলে যাচ্ছে আতঙ্কে। বালকও দেখছে দাদার দৃষ্টিটা ঘোলাটে হয়ে উঠল। তাঁর পরেই তিনি উল্টে গেলেন খাটের উপর। আশালতা বাতাস কাঁপিয়ে আর্তনাদ করে ছুটে এলেন তাঁর কাছে। ওঘর থেকে তাঁর বাবাও ‘কী হলো কী হলো’ বলতে বলতে হাজির হলেন। দাদার শরীর তখন প্রবল খিঁচুনিতে কেঁপে কেঁপে উঠছে। দুই হাত মুষ্টিবদ্ধ, দাঁতে দাঁত চেপে বসেছে। আশালতা তাঁকে প্রাণপণে জড়িয়ে ধরে কাঁপুনি বন্ধ করার চেষ্টা করছেন। বালক দরজা খুলে এপাশের কোয়ার্টার, ওপাশের কোয়ার্টার ছোটাছুটি করে অনেককে ডেকে নিয়ে এল। অনেক রকম কথা হতে লাগল – ডাক্তার, হাসপাতাল ইত্যাদি কিন্তু শেষ পর্যন্ত কিছুই করতে হলো না। প্রথমে খিঁচুনি বন্ধ হলো। শান্ত হয়ে কিছুক্ষণ শুয়ে থাকার পর চোখ খুললেন গোস্বামীবাবু। কথাও বললেন। দাঁতের চাপে তাঁর জিভ কেটে রক্ত বেরিয়ে গেছে। একজন বললেন, –এবার থেকে একটা চামচে মোটা করে ন্যাকড়া জড়িয়ে রেডি রাখবেন বৌদি। অজ্ঞান হচ্ছেন বুঝতে পারলেই দুপাটি দাঁতের মাঝখানে ঢুকিয়ে দেবেন, জিভ কাটবে না। আশালতা লোকটির দিকে শূন্য দৃষ্টিতে তাকিয়ে রইলেন।
নতুন করে যে-আলো জ্বলব জ্বলব করছিল আশালতার জীবনে, এক ফুঁয়ে তা নিভে গেল। পরদিন সকালে ডি এস পি হাসপাতালে ভর্তি করা হলো গোস্বামীবাবুকে। পালবাবু, বিশ্বাসবাবুরা ছোটাছুটি করতে লাগলেন। আশালতার বাবার ছুটি শেষ, তাঁকে জামসেদপুরে ফিরে যেতে হলো। ডি এস পি’র ডাক্তারবাবুরা আবারও কীসব পরীক্ষা করবেন বলে তাঁকে পনের দিন রেখে দিলেন হাসপাতালে। বালকের ইস্কুল যাবার কথা বালকও ভুলে গেল, বাকি সবাইও ভুলে গেল।
জানুয়ারি গিয়েছিল, ফেব্রুয়ারির মাঝামাঝি গোস্বামীবাবু হাসপাতাল থেকে ছাড়া পেলেন। এবারও অসুখ খুঁজে বের করতে পারলেন না ডাক্তারবাবুরা। তিনি একেবারে ভালো মানুষ, ডিউটিতে জয়েন করলেন কিন্তু সব সময় কী-হয় কী-হয় ভয়। বালকের পড়াশুনা নিয়েও তিনি খুব চিন্তিত হয়ে পড়েছেন। চন্দ্রশেখর এসেছিলেন। বালকের লেখাপড়া নিয়ে দুই ভাই অনেক অনেক কথা বললেন। গ্রামের কাছে যে হাই ইস্কুলটায় তাদের গাঁয়ের ছেলেমেয়েরা যায় সেটা তিন কিলোমিটার দূরে। হেঁটে হেঁটে যায় সবাই। হুমগড় চাঁদাবিলা হাই স্কুল। গোস্বামীবাবুর ইচ্ছে নয় সেই ইস্কুলে বালক ভর্তি হোক। গড়বেতায় খুব ভালো স্কুল আছে। গত বছর নতুন এগারো ক্লাসের হায়ার সেকেন্ডারি কোর্সের প্রথম ব্যাচ পরীক্ষা দিয়েছিল। তাতে আর্টস বিভাগে রাজ্যে প্রথম স্থান অধিকার করেছে গড়বেতা স্কুলের একটি ছেলে। বিহারীলাল চক্রবর্তী সেই স্কুলের হেডমাস্টার। খুব নাম আছে তাঁর। তাঁর লেখা ইংরাজি গ্রামারের বই বহু স্কুলের পাঠ্য তালিকায় আছে। বাবার সঙ্গে আলাপ পরিচয় আছে তাঁর। সেই সুত্রে চন্দ্রশেখরও তাঁকে চেনেন। কিন্তু তিনি খুব কড়া হেডমাস্টার। বালক অবশ্য ফাইভের পরীক্ষায় ভালোই ফল করেছে। তবু বলা যায় না। সিক্সে সিট খালি যদি না থাকে? তাছাড়া দু’মাস দেরিও হয়ে গেছে। চন্দ্রশেখর ভরসা দিলেন। বাবা স্বাধীনতা সংগ্রামী, বিহারীলালও কংগ্রেসি, বাবাকে শ্রদ্ধা করেন। বালকের রেজাল্টও ভালো। তিনি নিশ্চয় বিবেচনা করবেন।
ভর্তি না হয় হলো কিন্তু থাকবে কোথায়? গড়বেতা স্কুলের বোর্ডিং আছে। না না, বোর্ডিং-এ থাকবে কেন? আমাদের উকিলবাবুর মেস আছে না! উকিলবাবুর মেসেই তো তাদের দুই ভাই, কাকুর ছেলে অমরশঙ্কর আর দুর্গাশঙ্কর থাকে। চাঁদাবিলা, সাবড়াকোন স্কুল হয়ে শেষমেশ ক্লাস নাইনে গিয়ে গড়বেতা স্কুলেই ভর্তি করা হয়েছিল তাদের। অমর এবার হায়ার সেকেন্ডারি দেবে, দুর্গা ক্লাস টেন। পরের মাসেই অমরের পরীক্ষা, মেস ছেড়ে চলে যাবে। তার জায়গায় বালক দুর্গার সঙ্গে থাকতে পারবে। খরচ যা লাগবে গোস্বামীবাবু মাসে মাসে মানি অর্ডার করে পাঠিয়ে দেবেন। উকিলবাবু বাবার বন্ধু, আবার তিনি বেয়াইও। কাকুর ছোটো মেয়ের শ্বশুর তিনি। বালকের পড়াশুনার দিকে তিনি খেয়াল রাখতে পারবেন।
অতএব চৌদ্দ মাসের দুর্গাপুর-যাপন শেষ হলো বালকের। হাফ-প্যাডেলে ভর দিয়ে বাতাস কেটে এগিয়ে চলা ছাড়া আরও যা কিছু সে শিখল তার কিছু রইল তার দুটো খাতার মধ্যে, বাকিটা তার মাথায় অথবা বুকের গভীরে।
Writer | |
---|---|
Genre | |
Language |
বাংলা |
Country |
ভারত |
Format |
হার্ডকভার |
Publisher | |
Published |
October 2023 |
Rated 0 out of 5
0 reviews
Rated 5 out of 5
0
Rated 4 out of 5
0
Rated 3 out of 5
0
Rated 2 out of 5
0
Rated 1 out of 5
0
Be the first to review “হাফ প্যাডেলের কাল” Cancel reply
Related products
বাহ্ টুনটুনি বাহ্ বাহ্ ছোটাচ্চু
বইটি বর্তমানে আমাদের সংগ্রহে নেই। আপনি বইটি প্রি-অর্ডার করলে প্রকাশনায় মুদ্রিত থাকা সাপেক্ষে ৪-৮ সপ্তাহের মধ্যে ডেলিভারি করা হবে।
বীরশ্রেষ্ঠদের কথা
বইটি বর্তমানে আমাদের সংগ্রহে নেই। আপনি বইটি প্রি-অর্ডার করলে প্রকাশনায় মুদ্রিত থাকা সাপেক্ষে ৪-৮ সপ্তাহের মধ্যে ডেলিভারি করা হবে।
ভারতীয় দর্শনের মজার পাঠ
বইটি বর্তমানে আমাদের সংগ্রহে নেই। আপনি বইটি প্রি-অর্ডার করলে প্রকাশনায় মুদ্রিত থাকা সাপেক্ষে ৪-৮ সপ্তাহের মধ্যে ডেলিভারি করা হবে।
চিলড্রেন্স নলেজ : এনসাইক্লোপীডিয়া
বইটি বর্তমানে আমাদের সংগ্রহে নেই। আপনি বইটি প্রি-অর্ডার করলে প্রকাশনায় মুদ্রিত থাকা সাপেক্ষে ৪-৮ সপ্তাহের মধ্যে ডেলিভারি করা হবে।
যাত্রাগানে মতিলাল রায় ও তাঁহার সম্প্রদায়
দ্বিজেন্দ্রলাল রায় ও বাংলার কৃষক
সবুজ পণ্ডিত
বইটি বর্তমানে আমাদের সংগ্রহে নেই। আপনি বইটি প্রি-অর্ডার করলে প্রকাশনায় মুদ্রিত থাকা সাপেক্ষে ৪-৮ সপ্তাহের মধ্যে ডেলিভারি করা হবে।
Reviews
Clear filtersThere are no reviews yet.